প্রবন্ধ

নামায আদায়কারীর পুরস্কার ও উপকারিতা
*******************************************
আখেরাতের পুরুস্কার
উম্মুল মোমেনীন হযরত আয়েশা ছিদ্দিকা রা.
বলেন: নবী করীম সা. এর এ রকম অভ্যাস ছিল যে,
তিনি যখন ঘরে তাশরীফ আনতেন কোন লৌকিকতা
ছাড়াই ঘরবাসীদের সাথে প্রাণ খুলে কথাবার্তা
বলতেন। কিন্তু মুয়াজ্জিনের আজান শোনা মাত্রই
তিনি এরূপ ব্যাকুল হয়ে উঠতেন যে, সাথে সাথে
আমাদের সঙ্গে কথাবার্তা বন্ধ করে দিতেন এবং
নামাযের প্রস্তুতি নিতেন। তখন তাঁর অবস্থা দেখে
মনে হত, আমরা যেন তাঁর নিকট সম্পূর্ণ অপরিচিত।
এর কারণ এই ছিল যে, আল্লাহ তায়া’লা এবং তাঁর
বান্দার মধ্যে যোগাযোগের একমাত্র সূত্র হচ্ছে
নামায; সুতরাং এই নামাযের জন্য স্ত্রী-পুত্র তো
বটেই এমনকি সমগ্র দুনিয়া এবং দুনিয়ায় যা কিছু
আছে তার সবকিছু বিনষ্ট হলে ও কিছু আসে যায়
না। মহান রাব্বুল আলামীন নামাযী বান্দাদের জন্য
কি পুরস্কার রেখেছেন সে সম্পর্কে কুরআন ও
হাদীসের কয়েকটি উদ্ধৃতি নিম্নে পেশ করা হল।
১. মহান আল্লাহ তায়া’লা ইরশাদ করেন ঃ
ﺍﻟﺬﻳﻦ ﻳﻘﻴﻤﻮﻥ ﺍﻟﺼﻠﻮﺓ ﻭﻣﻤﺎ ﺭﺯﻗﻨﻬﻢ ﻳﻨﻔﻘﻮﻥ – ﺍﻭﻟﺌﻚ ﻫﻢ
ﺍﻟﻤﻮﻣﻨﻮﻥ ﺣﻘﺎ – ﻟﻬﻢ ﺩﺭﺟﺖ ﻋﻨﺪ ﺭﺑﻬﻢ ﻭﻣﻐﻔﺮﺓ ﻭﺭﺯﻕ ﻛﺮﻳﻢ –
‘‘যারা নামায কায়েম করে এবং আমার দেয়া
রিযিক থেকে ব্যয় করে। তারা হল সত্যিকার
ঈমানদার। তাদের জন্য তাদের প্রতিপালকের
কাছে রয়েছে মর্যাদা, ক্ষমা ও সম্মান জনক
রিযিক। [ সূরা আনফাল-৩-৪]
২. আল্লাহ তা’য়ালা আরো বলেন:
ﻭﺍﻟﺬﻳﻦ ﻫﻢ ﻋﻠﻰ ﺻﻠﻮﺗﻬﻢ ﻳﺤﺎﻓﻈﻮﻥ – ﺍﻭﻟﺌﻚ ﻫﻢ ﺍﻟﻮﺭﺛﻮﻥ – ﺍﻟﺬﻳﻦ
ﻳﺮﺛﻮﻥ ﺍﻟﻔﺮﺩﻭﺱ ﻫﻢ ﻓﻴﻬﺎ ﺧﻠﺪﻭﻥ –
‘‘আর যারা তাদের নামায সমূহের হিফাযত করে
তারাই হবে অধিকারী। অধিকারী হবে জান্নাতুল
ফেরদাউসের তাতে চিরকাল থাকবে। [সূরা মুমিনুন
-৯ -১১]
৩. হাদীসে কুদসীতে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ সা.
বলেছেন, আল্লাহ তায়া’লা বলেন ঃ
আমি আপনার উম্মতের উপর পাঁচ ওয়াক্ত নামায
ফরয করেছি এবং আমি আমার নিজের সাথে
অঙ্গীকার করেছি যে, যে ব্যক্তি যথা সময়ে
নামায সমূহের পূর্ণ হিফাযত করবে, আমি তাকে
জান্নাতে প্রবেশ করাব। আর যে নামায সমূহের
হিফাযত করবে না, তার জন্য আমার কাছে কোন
অঙ্গীকার নেই। [আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ]
৪. একবার রাসুলুল্লাহ সা. সাহাবীদের জিজ্ঞাসা
করলেনঃ যদি তোমাদের মধ্যে কারো ঘরের পাশ
দিয়ে কোন নদী প্রবাহিত হয় যার মধ্যে সে দৈনিক
পাঁচ বার গোসল করে, তাহলে বল, তার শরীরে কোন
ময়লা থাকবে কি? সাহাবীগণ আরয করলেন না, তার
শরীরে কোন ময়লাই থাকবেনা। নবী করীম সা.
বললেন, এরূপ হচ্ছে পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের দৃষ্টান্ত।
আল্লাহ তা’য়ালা এসব নামাযের মাধ্যমে তার
গুনাহগুলো মিটিয়ে দেবেন। [বুখারী, মুসলিম]
৫. হযরত আবুযার রা. বর্ণনা করেনঃ একবার শীতের
সময় যখন গাছের পাতা ঝরে পড়ছিল, নবী করীম সা.
বাইরে তাশরীফ আনলেন এবং গাছের দু’টি ডাল
ধরে ঝাঁকি দেয়া শুরু করলেন এবং ঝরঝর করে
(শুকনো) পাতা পড়তে লাগল। তখন নবী সা. বললেন,
হে আবুযার! যখন কোন মুসলমান একনিষ্ঠ হয়ে
আন্তরিকতার সাথে নামায পড়ে, তার গুনাহ সমূহ
ঠিক এভাবে ঝরে পড়ে যেমন এ গাছের পাতাগুলো
ঝরে পড়ছে। [মুসনাদে আহমদ]
৬. বান্দার চারটি আমল নিয়ে ফেরেশতারা
পরস্পরে বলাবলি করে। আমল সমূহ নিম্নরূপ ঃ
* নামাযের পর মসজিদে বসে আল্লাহর জিকির
করা।
* এক নামায শেষ করে পরবর্তী নামাযের
অপেক্ষায় বসে থাকা।
* জামায়া’তে নামায পড়ার আশায় পায়ে হেঁটে
মসজিদে যাওয়া।
* এবং অসুস্থ অবস্থায় শীতের কষ্ট উপেক্ষা করেও
পরিপূর্ণ অযু করা। এ চারটি কাজের মাধ্যমে
নামাযী ব্যক্তি সুখে-শান্তিতে বাস করবে এবং
নেককার বান্দা হয়ে মৃত্যু মুখে পতিত হবে। আর সে
সদ্যজাত শিশুর মত নিষ্পাপ হবে। [ মিশকাত]
৭. হাদীস শরীফে আছে, যে ব্যক্তি
ধীরস্থিরভাবে পরিপূর্ণ আদবের সাথে যথা
নিয়মে নামায আদায় করবে আল্লাহ্ তায়া’লা
তাকে পাঁচটি পুরস্কার দ্বারা সম্মানিত করবেন।
* তার রিজিক ও জীবিকার যাবতীয় কষ্ট দূর করে
দিবেন।
* তার কোন কবর আযাব হবেনা।
* কিয়ামতের দিন আমলনামা তার ডান হাতে
প্রদান করা হবে।
* সে বিদ্যুতগতিতে পুলসিরাত পার হতে পারবে।
* সে বিনা হিসেবে আনন্দের সাথে জান্নাতে
প্রবেশ করবে। [ফাজায়েলে নামাজ]
৮. হাদীস শরীফে আছে যে ব্যক্তি নামায পড়ে
মসজিদ হতে বের হয়, কিন্তু পরবর্তী নামাযে শরীক
না হওয়া পর্যন্ত তার অন্তঃকরণ মসজিদের দিকেই
থাকে এবং সে যথাসময়ে নামায সম্পন্ন করে সে
ব্যক্তি কিয়ামতের কঠিন দিবসে আল্লাহ্র আরশের
ছায়ায় আশ্রয় পাবে। [মিশকাত]
৯. রাসূলে কারীম সা. বলেছেন ঃ তোমরা সর্বদা
গুনাহর আগুনে জ্বলতেছ। তোমরা যখন ফজরের
নামায আদায় কর, তখন উহা নিভে যায়। ফজর হতে
জোহর পর্যন্ত আবার পাপের আগুনে জ্বলতে থাক।
যখন জোহরের নামায শেষ কর তখন উহা নিভে যায়।
পুনরায় জোহর হতে আসর পর্যন্ত আগুন জ্বালিয়ে
তার মধ্যে পোড়ার যাবতীয় ব্যবস্থা করতে থাক;
কিন্তু আসরের নামায সমাপ্ত করার সংগে সংগে
উহা নিভে শীতল হয়ে যায়। আবার আসর হতে
মাগরিব পর্যন্ত সময় উহা এমনভাবে জ্বলে উঠে যে,
উহার শিখা তোমাদেরকে ছাই করে ফেলতে চায়।
কিন্তু মাগরিবের নামায আদায় করা মাত্রই উহা
নির্বাপিত হয়ে যায়। তারপর ই’শা পর্যন্ত
তোমাদের পাপের আগুন আবার তীব্রভাবে জ্বলতে
থাকে এবং যখন তোমরা ই’শার নামায সম্পন্ন কর,
তখন উহা সম্পূর্ণরূপেই নিভে যায়। তখন তোমরা
সম্পূর্ণ নিষ্পাপ হয়ে ঘুমিয়ে থাক। ঘুম ভাংগা
পর্যন্ত তোমাদের আমল নামায় আর কোন প্রকার
গুনাহ লিখা হয়না। [তারগীব ও তারহীব]
 সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ্ নামাযের পুরস্কার
১. ফজরের সুন্নাত ঃ আয়েশা রা. হতে বর্ণিতঃ
নবী করীম সা. বলেছেন, ফজরের দু’রাকাআ’ত সুন্নাত
সমস্ত দুনিয়া ও উহার মধ্যবর্তী সকল নিয়ামত হতে
উত্তম। [মুসলিম]
২. জোহরের সুন্নাত ঃ উম্মে হাবীবা রা. হতে
বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, যে ব্যক্তি
জোহরের (ফরযের) পূর্বে চার রাকআ’ত এবং পরে
দু’রাকআ’ত সুন্নাত যথারীতি আদায় করে আল্লাহ
তায়া’লা তার জন্য জাহান্নামের আগুন হারাম করে
দিবেন। [তিরমিযী, আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ]
৩. আসরের সুন্নাত ঃ ইবনে উমর রা. হতে বর্ণিত
রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, যে ব্যক্তি আসরের
(ফরযের) পূর্বে চার রাকাআ’ত সুন্নাত পড়ে আল্লাহ্
তার প্রতি রহম করেন। [আবু দাউদ, তিরমিযী, আহমদ]
* হুজুর সা. আসরের সুন্নাত কখনো কখনো দু’রাকাআ’ত
পড়েতন।
৪. মাগরিবের সুন্নাত ঃ যে ব্যক্তি মাগরিবের
(ফরযের) পর দু’রাকাআ’ত স্ন্নুাত পড়ে তার সে
নামায উপরস্থ ইল্লিয়ীনে পৌঁছানো হয়। [আবু
দাউদ]
৫. ই’শার সুন্নাত ঃ যে ব্যক্তি দিনরাত ১২
রাকাআ’ত নামায পড়বে। তার জন্য বেহেশতে ঘর
নির্মান করা হবে। চার রাকআ’ত জোহরের পূর্বে,
দু’রাকআ’ত জোহরের পরে, দু’রাকাআ’ত মাগরিবের
পরে, দু’রাকাআ’ত ই’শার পরে এবং দু’রাকাআ’ত
ফজরের পূর্বে। [বায়হাকী]

একজন জান্নাতি মহিলার ধৈর্যের পরীক্ষা :
******************************************
আতা বিন আবি রাবাহ রহ.থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা.আমাকে বললেন, “আমি কি তোমাকে জান্নাতের একজন নারীকে দেখাবো? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বললেন, “এই
কালোমহিলাটি একদিন রাসুলুল্লাহ সা. এর কাছে এসে বললো, আমার মৃগী রোগ আছে এবং অজ্ঞান অবস্থায় আমার গায়ে কোনো কাপড় থাকেনা। দয়া করে আমার জন্য আল্লাহর কাছে দুআ করুন। রাসুলুল্লাহ সা. তাকে বললেন, তুমি যদি চাও এই রোগের ব্যাপারে ধৈর্য ধরতে তাহলে এটা তোমাকে জান্নাতে নিয়ে যাবে, আর তুমি যদি চাও তাহলে আমি তোমার রোগ মুক্তির জন্য
আল্লাহর কাছে দুআ করবো। মহিলাটি বললো,
তাহলে আমি এই রোগের ব্যাপারে ধৈর্য ধরবো।
কিন্তু অজ্ঞান অবস্থায় আমার গায়ে কোনো কাপড়
থাকেনা। আমার জন্য দুআ করুন, যাতে এইরকম না হয়।
তখন রাসুলুল্লাহ সা. সেই দুআ করলেন (যাতে করে
তার গা থেকে কাপড় সড়ে না যায়)। [সহিহ আল-
বুখারি ৭:৫৫৫]
ব্যাখ্যাঃ এই মহিলা খুব বুদ্ধিমান ছিলেন। কারণ
রাসুলুল্লাহ সা. তাকে অপশন দিয়েছিলেন, হয়
এইভাবে রোগে কষ্ট ভোগ করে ধৈর্য ধারণ করবে
আর এর প্রতিদান হিসেবে জান্নাতে যাবে। অথবা,
রাসুলুল্লাহ সা. তার রোগ মুক্তির জন্য আল্লাহর
কাছে দুআ করবেন। তখন সে ভালো ঠিকই হবে; কিন্তু
তার জান্নাতে যাওয়া অনিশ্চিত হয়ে যাবে।
মহিলাটি বুদ্ধিমান এইজন্য যে তিনি যদিও
অপছন্দনীয় ও কষ্টদায়ক একটা রোগ বেঁছে নিলেন,
কিন্তু তিনি ধৈর্য ধারণ করে জান্নাতে যাওয়ার
সুযোগটাকে হাত ছাড়া করলেননা। আর এইজন্য
সাহাবিদের মধ্যে সবচেয়ে জ্ঞানী একজন সাহাবি
আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. তার ছাত্রকে
“জান্নাতি নারী” হিসেবে পরিচয় করিয়ে
দিয়েছিলেন।
আমাদের জন্য শিক্ষাঃ আমাদের জীবনে অনেক
সময় দুঃখ কষ্ট আসে। আমরা যা চাই অনেক সময় হয়
ঠিক তার উলটা। আর তখন আমরা বলা শুরু করি,
আমার কপাল ভালোনা, ভাগ্যটাই খারাপ…
না, এই কথা মোটেই ঠিক না।
কারো ভাগ্য ভালো তখন হবে যখন আল্লাহ তাকে
জান্নাতে প্রবেশ করাবেন, আর কারো ভাগ্য
খারাপ তখন হবে যখন সে জাহান্নামে যাবে।
আর দুনিয়ার জীবনে ভালো মন্দ সবকিছুই হচ্ছে
পরীক্ষা। এইগুলো হচ্ছে পরীক্ষার প্রশ্ন। এর
বিপরীত আপনি কী আমল করছেন তার অনুপাতে
কেয়ামতের দিন রেজাল্ট দেয়া হবে। আর তখন কে
ভাগ্যবান আর কে হতভাগ্য নির্ধারিত হবে।
এমনও হতে পারে, দুনিয়ার জীবনে আপনি একটা
জিনিস পছন্দ করছেন না, অথচ এটাই আপনার জন্য
কল্যাণকর কিন্তু এখন আপনি সেটা বুঝতে পারছেন
না। যেমন উপরের হাদিসে বর্ণিত মহিলার ঘটনাটি।
কেয়ামতের দিন হয়তো বুঝতে পারবেন সেটা
আপনার জন্য কতো কল্যাণ নিয়ে এসেছে।
আবার, এমনও হতে পারে আপনি যেটাকে ভালো
মনে করছেন সেটা আপনার জন্য আরো বিপদজনক।
এই জন্যই হাদিসে বলা হয়েছে, “কামনা বাসনা
দ্বারা জাহান্নামকে ঢেকে রাখা হয়েছে, আর কষ্ট
ও বিপদ-আপদ দিয়ে জান্নাতকে ঢেকে রাখা
হয়েছে”। [সহিহ আল-বুখারি : ৬৪৮৭]
হে আল্লাহ তুমি আমাদেরকে কেয়ামতের দিন
মহাসাফল্য দান করো, আমিন।

 

{{এক বৃদ্ধার শিক্ষনীয় ঘটনা}}
**************//***************
এক বৃদ্ধার মুখমন্ডলে ঔজ্জ্বল্য দেখে একজন মহিলা তাকে প্রশ্ন করল,তোমার চেহারায় এ বৃদ্ধ বয়সেও লাবন্য ফুটছে,রুপ যেন এখনো যুবতীর মতই আছে। তুমি কোন ক্রিম ব্যবহার কর গো?

বৃদ্ধা সহাস্যে বলল,দুই ঠোঁটে ব্যবহার করি সত্যবাদিতার লিপিস্টিক,চোখে ব্যবহার করি {হারাম থেকে}অবনত দৃস্টির কাজল,মুখমন্ডলে ব্যবহার করি পর্দার ক্রিম ও গোপনীয়তার পাওডার,হাতে ব্যবহার করি পরোপকারিতার ভেজলীন,দেহে ব্যবহার করি ইবাদতের তেল,অন্তরে ব্যবহার করি আনুগত্য এবং প্রবৃত্তির জন্য ব্যবহার করি ঈমান।

সত্যিই কি অমূল্য ক্রিমই না ব্যবহার করে বৃদ্ধা।

তাই তো তার চেহারায় ঈমানী লাবন্য ও জ্যোতি।

হিন্দুস্তানের চুড়ান্ত যুদ্ধের হাদীস সমূহ
**************************************
আপনি এমন করছেন কেন ? রাসুল (সাঃ) বললেন আমি পূর্ব দিক থেকে বিজয়ের গন্ধ পাচ্ছি।
সাহাবি (রাঃ) জিজ্ঞাস করলেন, ইয়া রাসুল আল্লাহ্ কিসের বিজয়ের গন্ধ পাচ্ছেন?রাসুল (সাঃ) বললেন পূর্ব দিকে মুসলিম ও মুসরিক ( যারা মূর্তি পূজা করে ) তাদের মাঝে একটি যুদ্ধ হবে, যুদ্ধ টা হবে অসম ,মুসলিম সেনাবাহিনী সংখ্যায় খুব কম থাকবে, এবং মুস্রিকরা থাকবে সংখ্যায় অধিক।মুসলিম রা এত
মারা যাবা যে রক্তে মুসলিমদের পায়েয়
টাঁকুনি পর্যন্ত ডুবে যাবে।মুসলিম রা তিন ভাগে বিভক্ত থাকবে, এক
সারি এত বড় মুস্রিক সেনাবাহিনী দেখে ভয় পেয়ে পালাবে ।রাসুল (সাঃ) বললেন তারাই হোল জাহান্নামি।আর এক ভাগ এর সবাই শহীদ হবেন।শেষ ভাগ এ যারা থাকবে, তারা আল্লাহ্ আর উপর ভরসা করে যুদ্ধ করে যেতে থাকবে ,এবং শেষ পর্যন্ত জয় লাভ করবেন।রাসুল (সাঃ) বলেছেন – এই যুদ্ধ, বদর এর যুদ্ধের সমতুল্ল। সুবাহানাল্লাহ।উনি এর ও বলেছেন, মুসলিম রা যে জেখানেই
থাকুক না কেন , সবাই যেন ওই
যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে।হযরত সাওবান (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন আমার উম্মতের দুটি দলকে আল্লাহ তায়ালা জাহান্নাম থেকে মুক্ত ও স্বাধীন করে দিবেন। একদল হল, যারা হিন্দুস্থান
তথা ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে। আরেক দল
হল, যারা শেষ জামানায় হযরত
ঈসা ইবনে মারিয়ম (আ) এর সঙ্গী হবে।
(নাসায়ী শরীফ খন্ড-১,পৃষ্ঠা-১৫২ ও তাবরানী)
এই হাদীসটি অন্য বর্ণনায় এভাবে এসেছে,
রাসুল (সা) বলেছেন, আমার উম্মতের
দুটি দলকে আল্লাহ তায়ালা জাহান্নামের
আগুন থেকে হিফাজত করবেন। একদল হল,
যারা হিন্দুস্থান তথা ভারতের
বিরুদ্ধে জিহাদ করবে। আরেক দল হল,
যারা শেষ জামানায় হযরত ঈসা ইবনে
মারিয়ম (আ) এর সঙ্গী হবে। (মুসনাদে আহমাদ
হাদিস-২২২৯৫, খ-১৬ পৃষ্ঠা-২৯৫,
বায়হাকী খ-৯,পৃষ্ঠা-১৭৬, নাসায়ী শরীফ
জিহাদ অধ্যায়)
হযরত আবু হুরায়রা হতে বর্ণিত। রাসূল (সা)
বলেছেন, এ উম্মতের মধ্যে একটি মিশন সিন্ধু
ও হিন্দুস্থান তথা ভারতের দিকে পরিচালিত
হবে। আমি যদি এ অভিযান পেয়ে যাই
এবং জিহাদ করে শহীদ
হতে পারি তাহলে এমনটিই করব। আর
যদি জীবিত ফিরে আসি তাহলে আমি মুক্ত
স্বাধীন আবু হুরায়রা হয়ে যাব। আল্রাহ
আমাকে দোযখের আগুন থেকে মুক্ত
করে দিবেন। (মাসনাদে আহমাদ,হাদিস-৮৮০৮,
খ-৯ পৃষ্ঠা-১১)
হযরত আবু হুরায়রা আরও বর্ণনা করেন, রাসূল
(সা) আমাদেরকে ভারতের বিরুদ্ধে অভিযান
পরিচালনার ওয়াদা নিয়েছিলেন।
আমি যদি এ অভিযান পেয়ে যাই আহলে আমি
যেন আমার জান-মাল এতে ব্যয় করি। আর
যদি আমি এ যুদ্ধে নিহত হই তাহলে সর্বশ্রেষ্ঠ
শহীদরুপে পরিগনিত হব। আর যদি জীবিত
ফিরে আসি তাহলে আমি জাহান্নাম
থেকে মুক্ত আবু হুরায়রা হয়ে যাব।
(মাসনাদে আহমাদ,হাদিস-৭১২৮, খ-৬
পৃষ্ঠা-৫৩৩, সুনানে কুবরা, ইমাম
নাসায়ী হাদিস ২/৪৩৮৩ খ-৩ পৃষ্ঠা-২৮)
আলোচ্য হাদিস সমূহে এন্টি ভারত মুসলিমের
মর্যাদা বর্ণিত হয়েছে। অর্থাৎ যে মুসলিম
ভারতের বিরুদ্ধে লড়াই করে নিহত
হবে সে হবে শ্রেষ্ঠ শহীদ। আর যে মুসলিম
লড়াই করে জীবিত ফিরে আসবে,
সে হবে জাহান্নাম হতে মুক্ত স্বাধীন
মুসলিম। এ থেকে আরও প্রতিয়মান হয় যে,
যদি কোন মুসলিম ভারতপন্থিদের হাতে নিহত
হয় সেও শ্রেষ্ঠ শহীদের মর্যাদা লাভ করবে।
আর যদি কোন মুসলিম কোন ভারতপন্থির
হাতে নির্যাতিত হবে,
জখমী হবে তাহলে সেও জাহান্নাম
হতে মুক্তি লাভ করবে ইনশাআল্লাহ ।
উনি বলেছেন খোরাসান অঞ্ছল
থেকে কলেমা সম্বলিত পতাকাবাহী এক দল
এই যুদ্ধ শুরু করবে।
পূর্ব দিকে আমরাও ও পড়ি , একসময়
খোরাসান আমাদের অন্তর্ভুক্ত ছিল যা এখন
নেই।
আল্লাহ্ আমাকে ও আমাদের যেন ওই
যুদ্ধে অংশগ্রহণ করার তৌফিক দান করেন ।
আমীন।

যুবক-যুবতী তুমি কি জান আল্লাহরর রাসুল সঃ কি বলেছেন?
+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
✒ গোসলখানায় প্রসাব করা যাবে না।(ইবনে মাজাহঃ ৩০৪)

✒ কেবলামুখি বা তার উল্টো হয়ে প্রসাব,পায়খানা করা যাবে না।(সহিহ বুখারি ৩৯৫,নাসায়ীঃ ২১, আত তিরমিজিঃ ৮)

✒ গুলি বা তীরের নিশানা প্রশিহ্মণের জন্য প্রাণী ব্যাবহার

করা যাবে না।(মুসলিমঃ৫১৬৭,সুনানে আবু দাউদঃ২৮১৭,ইবনে মাজাহঃ ৩১৭০, আত তিরমিজিঃ১৪০৯)

✒ ইয়াহুদি, খ্রিষ্টান ও মুশরিক কাউকে বিয়ে করা যাবে না।

আল কোরআন(সূরা আন নিসা/নুর)

✒ স্বামী ব্যাতিত অন্য কারোর জন্য সাজা হারাম। আল কোরআন (আহজাবঃ ৩৩)

✒ মুর্তি কেনা, বেঁচা,পাহারা দেওয়া হারাম।আল কোরআন

(মাইদাহঃ৯০,ইবরাহীমঃ৩৫)

✒ কারো মুখমণ্ডলে আঘাত করা যাবে না।আল হাদিস (মুসলিমঃ৬৮২১, আবু দাউদঃ৪৪৯৬, আহমদঃ ৫৯৯১)

✒কাপড় পরিধাণ থাকা সত্তেও কারো গোপন অঙ্গের জায়গার দিকে দৃষ্টিপাত করা যাবে না।(মুসলিমঃ ৭৯৪,

তিরমিজিঃ২৭৯৩, ইবনে মাজাহঃ৬৬১, আহমদঃ ১১৫০১)

✒ আল্লাহ ব্যাতিত কারো নামে কসম করা যাবে না। বাপ দাদার নাম, কারো হায়াত,মসজিদ বা কোরআন এর নামে কসম করা,মাথায় নিয়ে সত্যতা প্রকাশ করা যাবে না। (আবু দাউদঃ ৩২৫০,নাসায়ীঃ ৩৭৭৮)

✒ কোন প্রাণীকে আগুনে পুড়িয়ে মারা যাবে না। আল হাদিস(আবু দাউদঃ ২৬৭৭,আহমদঃ ১৬০৩৪)

✒ যারা এগুলো করে তারা জান্নাতের গন্ধও পাবে না। (আবু

দাউদঃ ৩৬৬৮, ইবনে মাজাহঃ ২৫২)

“হে প্রতিপালক! তুমি বড় দয়াবান,,তুমি বড় রহমান,, তুমি বড় হ্মমাশিল,,তুমি নিজ হতে আমাদেরকে অনুগ্রহ

দান কর এবং আমাদের জন্য আমাদের কাজকর্ম সঠিকভাবে পরিচালনার ব্যবস্থা কর। অামিন৷

👉যুবকদের প্রতি ৭৫টি নসীহত👇

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিমঃ
সকল প্রশংসা সেই আল্লাহ তায়ালার
জন্য যিনি বলেন: “তোমাদের পূর্বে যাদেরকে
কিতাব দেয়া হয়েছিল তাদেরকে আমি নসীহত
করেছি এবং তোমাদেরকেও নসীহত করছি যে,
তোমরা আল্লাহকে ভয় কর।” (সূরা নিসা-১৩১)
দরুদ ও সালাম বর্ষিত হোক তাঁর ও রাসূল মুহাম্মদের
উপর। যিনি বলেন: আমি তোমাদেরকে নসীহত করছি
আল্লাহ ভীতির জন্য, ধর্মীয় নেতার কথা শোনা ও
তাঁর আনুগত্য করার জন্য। আল্লাহ ভীতি হলো তাঁর
আদেশ মান্য করা নিষেধ থেকে দূরে থাকা।
তাকওয়াই হলো দুনিয়া ও আখিরাতে সৌভাগ্যের
চাবিকাঠি।
নিম্নে কতিপয় মূল্যবান ইসলামী নসীহত
সন্নিবেশিত করা হল। নছীহতগুলো দৈনন্দিন
জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ের সাথে সংশ্লিষ্ট।
যেমন- ইবাদত-বন্দেগী, লেন-দেন, আদব-শিষ্টাচার,
চরিত্র-ব্যবহার ইত্যাদি। যে মুসলিম যুবক
প্রয়োজনীয় ও উপকারী বিষয় সম্পর্কে জানতে
আগ্রহী, আমরা সে যুবকের প্রতি তার স্মরণের
উদ্দেশ্যে এ নছীহতগুলো পেশ করছি। আর স্মরণ
মুমিনদের উপকারে আসবে। আমরা আল্লাহর
দরবারে আশা রাখি- যে ব্যক্তি এগুলো শুনবে বা
পাঠ করবে আল্লাহ তাকে উপকৃত করুন। যে ব্যক্তি
এগুলো লিখবে বা প্রচার করবে বা আমল করবে
তাকে সুমহান প্রতিদান ও পুরস্কারে ভূষিত করুন।
তিনি আমাদের জন্য যথেষ্ট এবং তিনিই সর্বোত্তম
কর্ম সম্পাদনকারী।

নছীহতগুলো নিম্নরূপ:
1. আল্লাহ তায়ালার জন্য নিয়তকে পরিশুদ্ধ করবে।
কথায় ও কাজে মানুষের প্রশংসা পাওয়া কিংবা
দুনিয়ার কোন স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্য রিয়া
পরিত্যাগ করবে।
2. যাবতীয় কথা, কাজ ও আচার-আচরণে মুহাম্মদ
মাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর আদর্শ
অনুসরণ করবে।
3. আল্লাহ তায়ালাকে ভয় করবে। যাবতীয় নির্দেশ
পালন এবং নিষেধ থেকে দূরে থাকতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ
হবে।
4. আল্লাহর নিকট খাঁটি ভাবে তওবা করবে। বেশী
বেশী ক্ষমা প্রার্থনা করবে।
5. তোমার কথা ও কাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে
আল্লাহর সূক্ষ্ম দৃষ্টির কথা স্মরণ রাখবে। জেনে
রাখ আল্লাহ্ তোমাকে দেখেন এবং তোমার হৃদয়ের
গোপন খবরও তিনি জানেন।
6. আল্লাহর প্রতি, তাঁর ফেরেশতাকুল, কিতাবসমূহ,
নবী-রসূলগণের প্রতি এবং শেষ দিবস ও তকদীরের
ভাল-মন্দের প্রতি দৃঢ়ভাবে ঈমান পোষণ করবে।
7. বিনা দলীলে কারো তাক্বলীদ বা অন্ধ অনুকরণ
করবে না।
8. ভাল কাজে প্রতিযোগিতা করবে।
9. (রিয়াযুস্ সালেহীন) কিতাবটি সংগ্রহ করবে।
নিজে পড়বে পরিবারের অন্যদেরকেও পড়ে
শোনাবে। ইমাম ইবনুল কাইয়েমের (যাদুল মাআদ)
গ্রন্থটিও সংগ্রহ করার চেষ্টা করবে। (কিতাব দুটি
বাংলায় পাওয়া যায়।)
10. প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য সকল নাপাকি থেকে সর্বদা
পবিত্র থাকবে।
11. জামাতের সাথে মসজিদে গিয়ে প্রথম
ওয়াক্তে নামায আদায় করতে সচেষ্ট থাকবে।
বিশেষ করে এশা ও ফযর নামায।
12. দুর্গন্ধযুক্ত খাদ্য পরিত্যাগ করবে। যেমন- কাঁচা
পিয়াজ, কাঁচা রসূন। এবং ধুমপান করে নিজেকে
এবং মুসলমানদেরকে কষ্ট দিবে না।
13. জামায়াতের বিশেষ ফজিলত হাসিলের লক্ষ্যে
সর্বদা জামায়াতে নামায আদায় করবে।
14. ফরয যাকাত আদায় করবে। যাকাত দেয়ার
ক্ষেত্রে হক্বদারেদের ব্যাপারে কৃপণতা করবে না।
15. আগে ভাগে জুমআর নামাযে যাওয়ার চেষ্টা
করবে। দ্বিতীয় আযানের পর মসজিদে আসার
অভ্যাস পরিত্যাগ করবে।
16. ঈমানের সাথে আল্লাহর নিকট প্রতিদান
পাওয়ার আশায় রমযানের রোযা পালন করবে। এর
মাধ্যমে তোমার পূর্বাপর যাবতীয় পাপ ক্ষমা করে
দেয়া হয়।
17. শরীয়ত সম্মত কোন ওজর ব্যতীত রমযান মাসের
কোন একটি রোযাও পরিত্যাগ করবে না। অন্যথা
গুনাহগার হয়ে যাবে।
18. রমযানের রাতগুলোতে কিয়াম করবে বিশেষ
করে লায়লাতুল ক্বাদরে-ঈমান ও প্রতিদানের
আশায় কিয়াম করবে। যাতে করে তোমার পূর্বকৃত
পাপসমূহ ক্ষমা করে দেয়া হয়।
19. যদি সামর্থবান হয়ে থাক তবে দ্রুত হজ্ব-ওমরার
উদ্দেশ্যে বায়তুল্লাহর দিকে সফর কর। দেরী করা
থেকে সাবধান হও।
20. পবিত্র কুরআন অর্থসহ পড়ার চেষ্টা কর। কুরআনের
আদেশ পালন কর, নিষেধ থেকে দূরে থাক। যাতে
করে প্রভুর দরবারে কুরআন তোমার পক্ষে দলীল হয়
এবং কিয়ামত ময়দানে তোমার জন্য সুপারিশ করে।
21. সর্বদা আল্লাহ তায়ালার জিকিরে মশগুল
থাকবে- প্রকাশ্যে-গোপনে, দাঁড়ানো, বসা ও
শোয়াবস্থায়-সর্বদাই। আল্লাহর জিকির থেকে
কখনো গাফেল হবে না।
22. যিক্রের মজলিসে (ইলমী অনুষ্ঠানে) বসবে।
কেননা এধরণের মজলিস জান্নাতের বাগান।
23. হারাম এবং গোপন বিষয় দেখা থেকে তোমার
দৃষ্টিকে নত রাখবে। সেদিকে দৃষ্টিপাত থেকে
সর্বদা সাবধান থাকবে। কেননা নিষিদ্ধ দৃষ্টি হল
শয়তানের পক্ষ থেকে একটি বিষাক্ত তীর।
24. টাখনুর নীচে কাপড় ঝুলিয়ে পরবে না।
চলাফেরায় কখনো অহংকারী ভাব প্রকাশ করবে
না।
25. রেশমের কাপড় বা স্বর্ণের কোন কিছু পরিধান
করবে না। কেননা তা পুরুষদের জন্য হারাম।
26. মহিলাদের সাদৃশ্য অবলম্বন করবে না। আর
তোমার পরিবারের কোন মহিলাকেও পুরুষের সাদৃশ্য
অবলম্বন করতে দেবে না।
27. দাড়ি ছেড়ে দাও। কেননা নবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “তোমার গোঁফ কাট
এবং দাড়ি ছেড়ে দাও।” (বুখারী ও মুসলিম)
28. হালাল ছাড়া অন্য কিছু ভক্ষণ করবে না এবং
হালাল ব্যতীত অন্য কিছু পান করবে না। তাহলে
তোমার দুয়া কবুল হবে।
29. খানা-পিনার সময় বিসমিল্লাহ্ বলবে। শেষ
করলে আলহামদু লিল্লাহ বলবে।
30. ডান হাতে খানা-পিনা করবে। লেন-দেনের
ক্ষেত্রে ডান হাতে গ্রহণ করবে এবং ডান হাতেই
প্রদান করবে।
31. কারো প্রতি জুলুম করবে না। কেননা কিয়ামত
দিবসে জুলুম অন্ধকার হয়ে দেখা দিবে।
32. মুমিন ব্যক্তি ব্যতীত অন্য কাউকে সাথী
হিসেবে গ্রহণ করবে না। আর তোমার খানা যেন
ভাল মানুষ ব্যতীত অন্যে না খায়।
33. সাবধান! ঘুষ খাবে না। নিবেও না দিবেও না, এ
ব্যাপারে মধ্যস্থতাও করবে না। কেননা এরূপ যে
করে সে অভিশপ্ত।
34. আল্লাহ্কে নাখোশ করে মানুষের সন্তুষ্টি চেও
না। কেননা আল্লাহ তাতে অসন্তুষ্ট হয়ে যাবেন।
35. শরীয়ত সম্মত প্রতিটি বিষয়ে নেতৃবৃন্দের
আনুগত্য করবে এবং তাদের সংশোধনের জন্য
আল্লাহর কাছে দুআ করবে।
36. সাবধান! কখনো মিথ্যা সাক্ষ্য দেবে না। আর
সত্য সাক্ষ্যও গোপন করবে না। (যে ব্যক্তি উহা
গোপন করবে তার অন্তর পাপী। আর তোমাদের আমল
সম্পর্কে আল্লাহ পরিজ্ঞাত। (সূরা বাকারা-২৮৩)
37. (সৎকাজের আদেশ করবে এবং অসৎকাজ থেকে
নিষেধ করবে। আর এক্ষেত্রে বিপদের সম্মুখীন হলে
ধৈর্য ধারণ করবে।) (সূরা লোকমান-১৭।) আল্লাহ্
এবং তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম যা আদেশ করেছেন তাই সৎকাজ এবং
তাঁরা যা নিষেধ করেছেন তাই অসৎকাজ।
38. ছোট-বড় সব ধরণের হারাম কাজ পরিত্যাগ কর।
কখনো আল্লাহ তায়ালার নাফরমানী করবে না।
এক্ষেত্রে কাউকে সহযোগিতাও করবে না।
39. কোন ভাল কাজকেই ছোট মনে করবে না। রাস্তা
থেকে কষ্টদায়ক কোন বস্তু পরিত্যাগ করাটাও
একটা ঈমানী কাজ। লজ্জাবোধ ঈমানের অংশ।
40. ব্যভিচারের নিকটবর্তী হবে না। আল্লাহ বলেন:
”তোমরা ব্যভিচারের নিকটবর্তী হয়ো না। কেননা
উহা অশ্লীলতা এবং খুবই নিকৃষ্ট কাজ।” (সুরা বানী
ইসরাইল-৩২)
41. পিতামাতার সাথে সাদাচার করবে। সাবধান!
তাদের কথা অমান্য করবে না যদি না তারা ইসলাম
বিরোধী নির্দেশ প্রদান করে। কিন্তু তারা যদি
ইসলাম বিরোধী কাজের নির্দেশ দেয় তবে
অবস্থায়ও ভদ্রতা বজায় রেখে তাদের সে নির্দেশ
পালন থেকে বিরত থাকবে।)
42. আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখবে। এবং তাদের
সাথে সম্পর্ক ছিন্নের ব্যাপারে সাবধান হবে।
43. প্রতিবেশীর সাথে ভাল ব্যবহার করবে। তাকে
কষ্ট দিবে না। সে কষ্ট দিলে তাতে ধৈর্য ধারণ
করবে।
44. সৎ ব্যক্তি এবং ঈমানী ভাইদের সাথে ঘন ঘন
সাক্ষাৎ করবে।
45. শুধুমাত্র আল্লাহর উদ্দেশ্যেই কাউকে
ভালবাসবে। আল্লাহর উদ্দেশ্যেই কাউকে ঘৃণা
করবে। কেননা এটা হল – ঈমানের সর্বাধিক মজবুত
হাতল।
46. সৎব্যক্তিদের সাথে সময় কাটানোর চেষ্টা
করবে। অসৎ সঙ্গ পরিত্যাগ করবে।
47. কোন মুসলিমকে বিপদগ্রস্থ অবস্থায় দেখলে যত
তাড়াতাড়ি পারা যায় তার সাহায্যের জন্য
এগিয়ে যাবে এবং তাদেরকে আনন্দিত রাখার
চেষ্টা করবে।
48. নম্রতা, ধীর স্থিরতা এবং ধৈর্যাবলম্বন করবে।
তাড়াহুড়া পরিত্যাগ করবে।
49. অন্যের কথার মাঝে বাধা সৃষ্টি করবে না।
সুন্দরভাবে তা শোনার চেষ্টা করবে।
50. জানা-অজানা সকল মুসলিম ভাইকে সালাম
দিবে।
51. সুন্নতি সালাম দিবে। বলবে: আসসালামু ওয়া
আলাইকুম। হাত বা মাথা দিয়ে ইশারা করাকেই
যথেষ্ট মনে করবে না।
52. কাউকে গালিগালাজ করবে না। খারাপ ভাবে
কারো বর্ণনা দিবে না।
53. কাউকে অভিশাপ দেবে না। এমনকি তা যদি
চতুষ্পদ জন্তু বা কোন জড় বস্তুও হয়।
54. কোন মানুষের ইজ্জতে কোন প্রকার অপবাদ
দিবে না বা তার কুৎসা রটনা করবে না। কেননা
এরূপ করা কবিরা গুনাহ।
55. চুগলখোরি করবে না। অর্থাৎ ফ্যাসাদ সৃষ্টির
উদ্দেশ্যে একজনের কথা অন্যজনকে বলবে না।
56. গীবত করবে না। (গীবত হল তোমার মুসলিম
ভায়ের দোষের কথা তার অসাক্ষাতে কারো কাছে
বলা)।
57. কোন মুসলিমকে ভয় দেখাবে না এবং তাকে
কোন প্রকার কষ্ট দিবে না।
58. মানুষের মাঝে সমঝোতা করার চেষ্টা করবে।
কেননা এটা হল একটি উত্তম আমল।
59. জবানের হেফাজত করবে। ভাল কথা বা কাজের
কথা বলবে, অন্যথা চুপ থাকবে।
60. সত্যবাদী হও মিথ্যা পরিত্যাগ কর। কেননা
মিথ্যা পাপ কাজের রাস্তা দেখায় আর পাপ
জাহান্নামে নিয়ে যায়।
61. দুমুখো হয়ো না। একই বিষয়ে এদের কাছে এক
কথা অন্যদের কাছে আর এক কথা বলবে না।
62. আল্লাহ ছাড়া অন্যের নামে শপথ করবে না। আর
সত্য বিষয় হলেও বেশী বেশী কসম করার অভ্যাস
করবে না।
63. কাউকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করবে না। কেননা
তাকওয়ার মানদণ্ড ছাড়া কারো উপর কারো
প্রাধান্য নেই।
64. কোন জ্যোতির্বিদ, গণক বা যাদুকরের কাছে
যাবে না। তাদের কোন কথা বিশ্বাস করবে না।
এতে ঈমানের ক্ষতি হয়।
65. কোন মানুষ বা প্রাণীর চিত্রাঙ্কন করবে না।
কেননা কিয়ামত দিবসে চিত্রকরদেরকে সবচেয়ে
কঠিন শাস্তি দেয়া হবে।
66. তোমার বাড়িতে কোন প্রাণীর ছবি রাখবে না।
কেননা তাতে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করে না।
67. কেউ হাঁচি দেয়ার পর আলহামদু লিল্লাহ বললে
তার জবাবে ইয়ারহামু কাল্লাহ বলবে।
68. কোন ক্রমেই তাবিজ-কবচ, তাগা ইত্যাদি
ব্যবহার করবে না। কেননা এগুলো ব্যবহার করা
শিরক।
69. প্রতিটি পাপকাজের জন্য অনতিবিলম্বে তওবা
করবে। খারাপ কাজ হয়ে গেলেই ভাল কাজ করবে,
যাতে উক্ত পাপ মোচন হয়ে যায়। এরূপ বলবে না
অচিরেই তওবা করব।
70. আল্লাহ্ তায়ালার ক্ষমা ও করুণার আশাবাদী
হও। আল্লাহর প্রতি সুধারণা রাখ।
71. আল্লাহ্র শাস্তির ব্যাপারে ভীত-সন্ত্রস্ত থাক।
তার শাস্তি থেকে নিজেকে নিরাপদ ভেবো না।
72. বিপদাপদে ধৈর্য ধারণকারী হও। এবং সুখের
কালে আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ হও।
73. অধিকহারে সৎকাজ করবে। যাতে করে মৃত্যুর
পরেও তার ছওয়াব জারি থাকে। যেমন মসজিদ
তৈরি করা, ইসলামী জ্ঞানের প্রচার ও প্রসার
করা।
74. আল্লাহর কাছে জান্নাত পাওয়ার প্রার্থনা
করবে এবং জাহান্নাম থেকে আশ্রয় কামনা করবে।
75. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম এর প্রতি অধিকহারে দরূদ পাঠ করবে।
ওয়া ছাল্লাল্লাহু আলা নাবিয়্যেনা মুহাম্মাদিন
ওয়ালা আলিহি ওয়াছাহবিহি ওয়া সাল্লাম।
কিয়ামত দিবস পর্যন্ত আল্লাহ তাঁর পরিবার ও সকল
সাহাবীদের প্রতি অবিরাম ধারায় রহমত ও শান্তি
নাযিল করুন। আমীন।

Leave a comment